তারুণ্য ও যৌবনউদ্বীপ্ত ত্বক কে না চায়? বয়স ৩০ বা ৩৫? পার্লার যাওয়ার সময় পান না? সারাদিনে খুব কাজের চাপ? সকাল থেকে সন্ধ্যা সারা দিনের কর্মব্যস্ততার কারণে আপনার ত্বক হয়ে পড়ে অনুজ্জ্বল ও মলিন। তাই ত্বকের অনুজ্জ্বল ও মলিনতা দূর করতে চাই নিয়মিত ঘরোয়া রুপচর্যা। যা ত্বককে করে তুলবে মসৃণ, নমনীয় ও প্রাণবন্ত।
কি করা যায় তাই ভাবছেন তো?
আপনার রান্নাঘরের অতি পরিচিত সামান্য কিছু উপাদান দিয়েই নিজেকে সুন্দর করে রাখতে পারবেন। প্রতিদিন ঝকঝকে-চকচকে ত্বক ধরে রাখতে ফেস প্যাক ব্যবহার করার আগে ত্বক স্ক্রাব করাটা খুবই জরুরি। কারন সপ্তাহে নিয়ম করে ২ থেকে ৩ দিন স্ক্রাব স্ক্রাব করার ফলে ত্বক থেকে সহজেই মৃত কোষ দূর হয়ে যাবে এবং বেরিয়ে আসে নতুন কোষ।ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে ত্বক হয়ে উঠবে নরম এবং কোমল।
তাই ঘরে বসেই ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ফেস স্ক্রাব করার সহজ উপায় তৈরীর পদ্ধতি চলুন এক নজরে দেখে নেই-
হলুদের স্ক্রাব
উপকরণ-
- ১ টেবিল চামচ চলের গুঁড়া
- এক টেবিল চামচ ময়দা
- আধা টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া
- পরিমাণ মতো ঠাণ্ডা দুধ
সমস্ত উপকরণভালভাবে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে গোল গোল করে হালকা হাতে মাসাজ করুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক ত্বক পরিষ্কার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এই প্যাক ত্বক যেমন পরিষ্কার করে তেমননি সান ট্যান দূর করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
চন্দন গুঁড়োর ফেস স্ক্রাব
উপকরণ-
- চন্দন গুঁড়ো
- কেশর
- গোলাপ জলসমস্ত
উপকরণ ভালভাবে একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখে লাগিয়ে গোল গোল মাসাজ করুন। তারপর মিশ্রয়ণটি ১০মিনিট রেখে, ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। এই প্যাক মুখের দাগ ছোপ, সান ট্যান দূর করে ত্বককে করে তোলে ঝকঝকে।
মনে রাখা ভালো
- আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত শুষ্ক এবং সংবেদনশীল হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে স্ক্রাব না করাই ভালো।
- সার্কেল মোশনে স্ক্রাব করতে হবে।
- স্ক্রাব করার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
- সপ্তাহে এক দিনের বেশি স্ক্রাব করা স্কিনের পক্ষে ক্ষতিকর।
- সব ধরনের ত্বকেই দুই থেকে তিন মিনিটের বেশি স্ক্রাব করা যাবে না।
- স্ক্রাব করার পর কোল্ড কম্প্রেস করতে হবে। অর্থাৎ, একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে
- আলতোভাবে পুরো মুখ মুছে নিতে হবে। গোসলের আগে স্ক্রাব করলে পানির সঙ্গে একটু
- গোলাপজল ও বরফ মিশিয়ে নিন। এতে তরতাজা ভাব আসে। এ ছাড়া স্ক্রাবিংয়ের পর শরীরে
- তাপ সৃষ্টি হয়, বা গরম ভাব আসে। তাই কোল্ড কম্প্রেস করলে অনেক সময় লোমকূপ খুলে
- গেলেও তা পরে বন্ধ হয়ে যায়।
স্ক্রাবিংয়ের পর অবশই ফেস প্যাক ব্যবহার করা উচিত। কারন স্ক্রাবিংয়ের ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে ফেস প্যাক ব্যবহার করলে ত্বকের কোল্ড কম্প্রেস ও ময়েশ্চারাইজার ঠিক থাকে। এটি একটি ফেস প্যাক তৈরির সিক্রেট ফর্মুলা। নিয়মিত এই ফেস প্যাক ব্যবহারে দীর্ঘদিন অটুট থাকবে আপনার তারুণ্য। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ঘরোয়া উপায়ে প্যাক তৈরিতে কী কী লাগবে চলুন এক নজরে দেখে নেই-
শসার ফেস মাস্ক
উপকরণ-
- ১ চামচ শসার রস
- ২ চামচ দুধ
- অল্প পাতিলেবুর রস
প্রসতুত প্রণালী-
পরিমান মতো শসার রস, দুধ ও পাতিলেবুর রস একটা পাত্রে মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখে মেখে ফেলুন। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। রোজ করেই দেখুন। শসায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখার পাশাপাশি আপনার ত্বকের যাবতীয় দাগ, ছোপ, পিগমেন্টেশন এক্কেবারে ভ্যানিশ করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-এইজিং ফেস মাস্ক
উপকরণ-
- মিহি চালের গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ (চাইলে ময়দা ব্যবহার করতে পারেন)
- তাজা হলুদ গুঁড়ো বা বাটা ১ চা চামচ
- কাঁচা দুধ ৫ চা চামচ
- গোলাপ জল ১ চা চামচ
- শসার রস ১ চা চামচ
- মধু ১ চা চামচ
মিশ্রণটি বানানোর পদ্ধতি-
প্রথমে একটি বাটিতে পরিমান মতো চালের গুঁড়ো , হলুদ গুঁড়ো, শসার রস ও দুধ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পেস্টের মত তৈরি করুন। মুখ ভালো করে ধুয়ে মিশ্রণটি ভেজা মুখে আলতো ঘষে লাগান। ১০ মিনিট রেখে দিন। ১০ মিনিট পর হালকা করে ঘষে তুলে নিন। এরপর মুখে ১০ মিনিট মধু মাখিয়ে রাখুন। হাল্কা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মুখ মুছে নিয়ে গোলাপ জল লাগিয়ে নিন আলতো করে। সপ্তাহে ৩/৪ বার এই ফেস প্যাকটি ব্যবহারেই আপনি পাথক্য বুজতে পারবেন।