রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার কার্যকরী উপায়

24

রাগ এমন একটি স্বাভাবিক অনুভূতি যা কিনা ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান। কিন্তু বিপত্তিটা ঘটে এর মাত্রার উপর। অত্যধিক কোন জিনিসই ভালো নয়, ঠিক তেমনি রাগ এমন একটি মানবিক অনুভূতি যা কিনা সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করার আগেই নিয়ন্ত্রণ করতে জানতে হয়।
“রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন ” এই ধরনের একটা কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে। কথাটা কিন্তু যথার্থই কেননা আমরা যখন রাগের মাথায় কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি গবেষণায় দেখা গেছে সেই সিদ্ধান্তগুলো বেশিরভাগই ভুল হয়ে থাকে ।আর এতে করে শুধুমাত্র আমাদের ক্ষতির মাত্রাটাই বাড়ে। সে জন্যেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটা জরুরি।

কিন্তু কীভাবে নিয়ে আসবেন নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণে?

চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু কার্যকরী টিপসঃ

১.কথা বলার আগে চিন্তা করুনঃআমরা যখন রেগে থাকি তখন আসলে কেউই আমরা ভেবেচিন্তে কথা বলি না মুখে এবং মাথায় যা আসে তাই বলে ফেলি যা করা একেবারে নিতান্তই বোকামির কাজ। কেননা রাগান্বিত অবস্থায়, মূহুর্তের উত্তাপে এমন কিছু বলে ফেলা খুবই সহজ, যা কিনা পরে ভেবে আমরাই অনুশোচনা করি। তাই রাগের মাথায় কিছু বলার আগে আপনি মাথা ঠান্ডা রেখে কিছুটা সময় নিন এবং পরিস্থিতির সাথে জড়িত বাকীদেরকেও অনুরুপ করতে বলুন। এতে করে রাগের মাথায় আপনার বলা কোনো রকম কটুবাক্য দ্বারা যেমন একজন মনে কষ্ট পাবেন না, ঠিক তেমনি ভেবেচিন্তে কথা বলার জন্যে পরিস্থিতি আস্তে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

২.শান্ত থাকুনঃ
আপনি যত স্পষ্টভাবে চিন্তা করবেন এবং শান্ত থাকবেন তাতেই আপনার মঙ্গল। তাই রাগান্বিত অবস্থায় শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং অন্যকে আঘাত করা বা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে আপনার উদ্বেগ এবং প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে এবং সরাসরি বর্ণনা করুন পরিস্থিতির সাথে সংশ্লিষ্ট বাকীদের।

৩.চোখ-কান বন্ধ করে বড় বড় নিশ্বাস নিনঃরাগের সময় উপরোক্ত নিয়মটি খুবই কার্যকর এবং গবেষণামতে দেখা গিয়েছে যে, প্রচন্ড রাগের সময়কার এই সময়টায় ব্যক্তি যদি তার চোখ-কান বন্ধ করে বড় বড় শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করেন সেই সময়ে ব্যক্তির মাথার ভেতরে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আর এতে করে রাগের মাত্রা আস্তে আস্তে সহনীয় মাত্রায় চলে আসে এবং একটা পর্যায়ে ব্যক্তি স্বাভাবিক হয়ে যান। আর এই পদ্ধতি রাগ কমানোর ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

৪.ব্যায়াম করুনঃশারীরিক কার্যকলাপ চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনি যদি মনে করেন আপনার নিজের ক্রোধ বেড়ে গিয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনি কিছুটা সময় নিয়ে বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসুন। এই সময়টুকুতে একটু নিজেকে সময় দিন। আশপাশের কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশে গিয়ে হাঁটাচলা, দৌড়ানো কিংবা খুব সহজ কিছু আনন্দদায়ক শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন।

৫.পছন্দের গান শুনতে থাকুনঃ
গানকে বলা হয়ে থাকে মাইন্ড রিলাক্সিং ঔষধ। গান শোনার ফলে আপনার রাগের মাত্রা কিছুটা হলেও কমে আসবে। তাই প্রচন্ড রাগের এই সময়টুকুতে চটজলদি করে আপনার পছন্দের পুরোনো দিনের কিংবা নতুন রিলিজ হওয়া কোনো গান শুনে ফেলুন।

তাই রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।নিজের শারীরিক ও মানসিক উন্নতি সাধন করুন।সর্বোপরি জীবনকে নতুন আঙ্গিকে, নতুন রূপে আবিস্কার করুন।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.